
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য জোর প্রস্তুতি চলছে নির্বাচন কমিশনে। ইতিমধ্যে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের করণীয় শীর্ষক গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা প্রদান করেছে ইসি। সরজমিনের কেন্দ্র পরিদর্শনপূর্বক কেন্দ্র হালনাগাদকরণ, ভোট গ্রহণ কর্মকর্তাদের তথ্য প্রস্তুত করে নির্বাচন কমিশনে প্রেরণ এবং সীমানা সংক্রান্ত জটিলতা থাকলে তা নিরসনকরনসহ নানা নির্দেশনা প্রদান করেছেন বলে জানিয়েছেন জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ তোফায়েল হোসেন।
রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তপ্ত, আদৌ নির্বাচন হবে কিনা এমন শংকার মাঝেও নির্বাচন কমিশন পুরোদমেই প্রস্তুতি নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন বলে জানান এ কর্মকর্তা। নির্বাচন কমিশন ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝিতেই ১৩তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের যে ঘোষণা দিয়েছেন তা বাস্তবায়নের জন্য রূপরেখা প্রস্তুত করে কমিশন সকল প্রস্তুতি নিচ্ছে। ভোটার তালিকা হালনাগাদ করে তা নির্বাচন কমিশনে ঘোষণা করা হবে শীগ্রই। জেলায় কত সংখ্যক ভোটার বেড়েছে, আসন ভিত্তিক ভোটার সংখ্যা কত তা জানাতে কয়েকদিন সময় লাগবে বলে জেলা নির্বাচন অফিসার ।
এদিকে জেলায় কতজন ভোটার মৃত্যুবরণ করেছেন তার একটি সঠিক পরিসংখ্যান প্রস্তুত করে নির্বাচন কমিশনের প্রেরণ করেছেন জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা। এটি হালনাগাদকৃত পরিপূর্ণ মৃত ভোটার তালিকা যা আপডেট পরিসংখ্যান বলে নিশ্চিত করেন তিনি। জেলা নির্বাচন অফিসের তথ্য অনুযায়ী জেলায় ২৭ হাজার ২৮৫ জন মৃত ভোটার সনাক্ত করা হয়েছে। মূল ভোটার তালিকা থেকে মৃত ভোটার বাদ দিয়ে অবশিষ্ট ভোটার তালিকা শীঘ্রই প্রকাশ করা হবে বলে তিনি জানান।
জেলা নির্বাচন অফিসের তথ্য অনুযায়ী জেলার ৯ উপজেলায় নতুন করে ভোটারের তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে অর্থাৎ ভোটার বেড়েছে ১ লক্ষ ৩৮ হাজার ৭০০ জন। অর্থাৎ পূর্বের তালিকা থেকে মৃত ভোটার বাদ দিয়ে ১ লক্ষ ৩৮হাজার ৭০০ জন ভোটার প্রকাশিতব্য তালিকায় যোগ হবেন বলে নিশ্চিত করেন জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা। উপজেলা ভিত্তিক কক্সবাজারের নতুন ভোটারের পরিসংখ্যান এবং সেখান থেকে মৃত ভোটার কর্তনের পরিসংখ্যান হলো মহেশখালী উপজেলায় নতুন ভোটার বেড়েছে ২৩১১৭ জন, সেখানে মৃত ভোটার রয়েছে ২৪২৫ জন। কুতুবদিয়া উপজেলায় নতুন ভোটার বেড়েছে ৭৯৯৫ জন, মৃত ভোটার বাদ পড়েছে ২৩৯০ জন। পেকুয়া উপজেলায় নতুন ভোটার বেড়েছে ১২৩৩১ জন, মৃত ভোটার বাদ পড়েছে ২৫০৭ জন। রামু উপজেলায় নতুন ভোটার বেড়েছে ১৬ হাজার ২৮২ জন, মৃত ভোটার বাদ পড়েছে ৩৬৬২ জন। চকরিয়া উপজেলায় নতুন ভোটার বেড়েছে ২৭ হাজার ৩৭৬ জন, মৃত ভোটার বাদ পড়েছে ৬৫০৭জন। ঈদগাহ উপজেলায় নতুন ভোটার বেড়েছে ৫৯২৭ জন, বাদ পড়েছে ৮৩৭ জন। কক্সবাজার সদর উপজেলায় নতুন ভোটার বেড়েছে ১২১১৮ জন, মৃত ভোটার বাদ পড়েছে ৪১৩১ জন। উখিয়া উপজেলায় নতুন ভোটার বেড়েছে ১৬ হাজার ৫৭১ জন, মৃত ভোটার বাদ পড়েছে ২৬৭৮ জন এবং টেকনাফ উপজেলায় নতুন ভোটার বেড়েছে ১৬ হাজার ৯৮৩ জন এবং মৃত ভোটার বাদ পড়েছে ২১৪৮ জন। জেলা নির্বাচন কমিশনের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী জেলায় ১ লক্ষ ৩৮ হাজার ৭০০ জন ভোটার বেড়েছে এবং মৃত ভোটার বাদ পড়েছে ২৭২৮৫ জন। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদকরণের যে কর্মসূচি গ্রহণ করে নির্বাচন কমিশন তার পরিপূর্ণ তথ্য প্রকাশ করেছে জেলা নির্বাচন অফিস।
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ তোফায়েল হোসেন জানান, ২০২১ সাল থেকে কক্সবাজার জেলার বিভিন্ন উপজেলায় অনেক ভোটার মৃত্যু গ্রহণ করেছেন কিন্তু তা পরিসংখ্যানে আসেনি ফলে হালনাগাদকৃত তথ্যে ২৭২৮৫ জন ভোটার মৃত পাওয়া গেছে। উক্ত ভোটার হালনাগাদকারী কর্মকর্তাগণ মাঠে জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত জরিপ চালিয়ে উপরোক্ত তথ্য ও পরিসংখ্যান উপস্থাপন করে নির্বাচন কমিশনে প্রেরণ করেছেন। তিনি বলেন নির্বাচন কমিশন থেকে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য প্রিসাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার, পুলিং অফিসার এবং কক্সবাজার জেলার কতটি ভোট কেন্দ্র এবং কয়টি বুথ হবে এবং কেন্দ্রের বর্তমান অবস্থা কেমন, সংস্কার করতে হবে কিনা তার হালনাগাদ তথ্য চেয়েছে ইসি।
জেলা নির্বাচন অফিসার বলেন, উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদেরকে নির্দেশনা দিয়েছি তারা যেন কেন্দ্র সমূহ পরিদর্শন করে বর্তমান কি অবস্থা রয়েছে, কি কি সংস্কার করতে হবে তার পরিপূর্ণ তথ্যসমুহ ছক আকারে প্রদান করার জন্য। কক্সবাজারের আসনভিত্তিক ভোটারের পরিসংখ্যান চলতি সপ্তাহে প্রকাশ করবে নির্বাচন কমিশন একটাই জানিয়েছেন জেলা নির্বাচন অফিসার। সুত্র দৈনিক কক্সবাজার
পাঠকের মতামত